লেবু খাওয়ার ২০ টি উপকারিতা ও তার বিশেষণ
আমাদের বাংলাদেশে লেবু খাই না এমন হয়তো কেউ নেই। কমবেশি লেবু সবাই খেয়ে থাকে। লেবু অনেক কাজেও ব্যবহারিক হয় যেমন রান্নার কাজ সহ বিভিন্ন ওষুধতে ব্যাবহার করা হয়।
লেবুতে রয়েছে অনেক ভিটামিন। আপনি যদি লেবু খাওয়ার ২০ টি উপকারিতা ও তার বিশেষণ সম্পর্কে জানেন তাহলে আপনিও চাইবেন লেবু খেতে।
.
কুসুম গরম পানিতে লেবু ও মধু খাওয়ার উপকারিতা
অনেকেই আছেন সকালে অথবা রাতে ভাতের সাথে লেবু রস খাওয়া। আবার অনেকেই আছেন রসের সাথে লেবুর চোঁচাটাও চিবিয়ে খেয়ে থাকেন। এই গরমে বেশি বেশি করে লেবু খাওয়াটা শরীরের জন্য অনেকটা উপকারী। তবে লেবু গরমে বা শীতে যেকোনো সময়েই খাওয়া যায়। লেবু খাওয়ার আরেকটা মজা হচ্ছে।
যাদের লেবু খাওয়ার অভ্যাস আছে বিশেষ করে তাদের জন্য। লেবু বারোমাসি পাওয়া যায়। গরমের সময় কেউ খায় শরবত করে আবার শীতের সময় কেউ খায় চায়ের সঙ্গে। তবে কুসুম গরম পানিতে লেবু মধু খাওয়ার উপকারিতা যদি আপনি জানেন তাহলে আপনিও নিয়মিত লেবু ও মধু মিশে খান।
লেবু ও মধু গরম পানিতে মিশিয়ে খাওয়ার জন্য। আপনাকে আগে একটা পাত্রে সাভাবিক তাপমাত্রায় গরম পানি করে নিতে হবে।পানি গরম করা হয়ে গেলে একটা গ্লাসে পানিটুকু নিয়ে নিন এরপর পাতি লেবু কেটে অর্ধেক লেবুর রস দিয়ে দিন। এক থেকে দুই চা চামচ মধু মিশিয়ে নিন।
মধু মেশানো হয়ে গেলে সবগুলো ভালো করে মিক্সড করে নিন। এরপর চায়ের মত খেয়ে নিন। তবে এইভাবে সকালে বা রাতে খাওয়াই বেশি উপকারী স্বাস্থ্যের জন্য। লেবু রস ক্যান্সার প্রতিরোধ করতে সহয়তা করে।
গরম পানিতে লেবু খাওয়ার অপকারিতা
লেবু খাওয়া শরীরের জন্য যতটা উপকারী ঠিক ততটা অপকারী। আপনি যদি লেবু খাওয়ার সঠিক নিয়ম কারণ না জেনে খান তাহলে আপনার যেকোনো সময় শরীরের যেকোনো ক্ষতি হতে পারে। লেবু খাওয়ার ২০ টি উপকারিতা ও তার বিশেষণ সম্পর্কে যদি আপনি জানেন তাহলে আপনি নিয়মিতই লেবু খেতে পারেন।
লেবু বেশি পরিমাণ খেলে গ্যাস্টিক থেকে শুরু করে এসিডের সমস্যা হতে পারে। যেকোনো সময় পাশ্ব প্রতিক্রিয়া দেখা দিতে পারে। অতিরিক্ত লেবু খেলে বুক জ্বালাপোড়া করতে শুরু করে। অতিরিক্ত লেবু শরবত পান করলে শরীর দুরব হতে পারে।
যেকোনো সময় পেট খারাপ হতে পারে, হাড়ের উপর যেকোনো সময় প্রভাব ফেলতে পারে, দাঁতেরও ভিতর বিভিন্ন রকম ব্যাকটেরিয়া সৃষ্টি হতে পারে, ঘন ঘন প্রসাব হতে পারে ইত্যাদি তাই লেবু খাওয়ার আগে অবশ্যই আপনাকে নিয়ম ও পরিমাণ জেনে খেতে হবে। বিশেষ করে তাদের জন্য যারা লেবু পছন্দ করেন বেশি।
তাই তারা নিয়ম না জেনেই অতিরিক্ত লেবু খেয়ে ফেলেন। আর অতিরিক্ত লেবু খাওয়ার পর যখন সমস্যা সৃষ্টি হয় তখন হয়তো ভাবেন খাবারে কোন তৈলাক্ত জিনিসের কারণে এই সমস্যাটা বিশেষ করে গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা বেশি দেখা যায়। আসলে তৈলাক্ত তো জিনিসের জন্য না অতিরিক্ত লেবু খাওয়ার পরিমাণ এই সমস্যাটা দেখে যেতে পারে।
ওজন কমাতে লেবু পানি খাওয়ার নিয়ম
নেব আমরা কমবেশি সবাই খেয়ে থাকি। লেবুতে রয়েছে ভিটামিন সি। ওজন কমানোর জন্য কুসুম গরম পানিতে লেবুর রস দিয়ে খেতে পারেন। এতে করে আপনার শরীরে ওজন অনেকটাই কমিয়ে নিয়ে আসবে নিয়মিত সকাল এবং রাত দিনে দুইবার খেতে হবে। তবে খালি পেট এবং ভরা পেটে দুইভাবেই খেতে পারেন।
লেবুর রস পানিতে দেওয়ার আগে অবশ্যই পরিমাণ মতোই দিবেন একটা লেবুর অর্ধেক রস দিবেন। অনেকে আবার লেবু পানির সাথে মধু মিশিয়ে থাকেন। লেবু খেলে বিভিন্ন রোগ বালাই প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে। তবে আপনারা চেষ্টা করবেন অবশ্যই ভরা ভালো পেটে লেবুর রস খেতে কারণ খালি পেটে লেবুর রস খেলে একটু পরিমাণ বেশি হলেই হতে পারে গ্যাস্ট্রিকসহ আরসিডিটির সমস্যা।
আরও পড়ুন : দ্রুত ওজন ক মাতে নিম পাতা খাবেন যেভাবে
মুখে রুচি বাড়াতেও লেবু ওষুধের মত কাজ করে। আপনি চাইলে চায়ের সাথেও লেবুর রস খেতে পারেন বা ভাতের সাথে ও লেবু খেতে পারেন। এতে করে আপনার খাওয়ার প্রতি রুচি দ্বিগুণ বেড়ে যাবে। ওজন কমাতে চাইলে লেবুর রসের শরবত ও আর লেবু খাওয়ার পাশাপাশি অবশ্যই আপনাকে নিয়মিত ব্যায়াম করতে হবে।
এত করে আপনার শরীরের যত ঘাম ঝড়বে তত আপনার ওজন কমাতে সাহায্য করবে। তৈলাক্ত খাবারের থেকে ফলমূল শাকসবজি বেশি করে খান এতে করে অনার্সেই ওজন কমাতে পারবেন। আশা করছি এই নিয়মগুলো মেনে চললেই ওজন কমাতে পারবেন অনেকটা ঘরোয়া উপায়ে।
লেবু খাওয়ার ২০ টি উপকারিতা ও তার বিশেষণ
উপরে পড়ে আপনারা নিশ্চয়ই বুঝতে পেরেছেন লেবু আমাদের জন্য কতটা প্রয়োজনীয়। বিশেষ করে এই গরমে। লেবু খেলে আমাদের বিভিন্ন রোগ বালাই থেকে শুরু করে ক্যান্সার প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে। আপনাদের এখন জানাবো লেবু খাওয়ার ২০ টি উপকারিতা। আপনারা কি জানেন লেবুর বৈজ্ঞানিক নাম কি। লেবুর বৈজ্ঞানিক নাম হল লেমন বা ( সাইট্রাস লিমন) যার বাংলা হচ্ছে লেবু। লেবু বিভিন্ন প্রকারের হয়ে থাকে।
- লেবু খাবারের রুচি বাড়াতে সাহায্য করে
- লেবু ওজন কমাতে সাহায্য করে
- ছোট বড় রোগ বলাই থেকে শুরু করে ক্যান্সার প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে
- মাথার নতুন চুল গজাতে সাহায্য করে
- ত্বকের বর্ণ দূর করতে সাহায্য করে
- কিডনিতে পাথর হওয়া থেকে সুরক্ষিত করে
- মাথার খুশকি দূর করতে সাহায্য করে
- হালকা গরম পানিতে লেবুর রস মিশিয়ে খেলে হজম শক্তি বাড়ে
- রক্তস্বল্পতা দূর করে
- শরীরের যেকোনো ক্ষতস্থান তারাতারি সুখাতে সাহায্য করে
- আয়রনের ঘাটতি কমাতে সাহায্য করে
- ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়াতে সাহায্য করে
- গলার ব্যথা দূর করতে সাহায্য করে
- দাঁতের ব্যথা দূর করতে সাহায্য করে
- সকালে খালি পেটে লেবু খেলে মেদ ভুড়ি কমাতে সাহায্য করে
- উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে
- ফসফরাস ক্যালসিয়াম ভিটামিন সি এর ঘাটতি পূরণ করে
- চুল পড়া বন্ধ করতে সাহায্য করে
- বুক জ্বালাপোড়া কমাতে সাহায্য করে
- শরীরকে স্ট্রং ও সতেজ রাখে।
লেবু পানি কখন খাওয়া উচিত
লেবু খাওয়ার ২০ টি উপকারিতা ও তার বিশেষণ সম্পর্কে আমরা উপরেই জেনে এসেছি যে লেবু আমাদের জন্য কতটা উপকারী ও অপকারী। শরীরকে হাইড্রেট রাখতে সাহায্য করে লেবুর পানি। দূষিত পদার্থ বের করে কে শরীরিলকে সুস্থ রাখতে সহায়তা করে এই লেবুর পানি।
হজম শক্তি বাড়ে ও খাওয়ার প্রতি রুচি বাড়ে এই লেবুর পানি খেলে। তাছাড়া কোষ্ঠকাঠিন্য সমস্যা ও দূর করে এই লেবুর পানি। দিনে দুই থেকে তিনটা লেবু খাওয়া উচিত। সেটা আপনি খাবারের সাথেই খান, লেবুর পানি করে খান বা শরবত বানিয়ে খান। আপনি যদি নিয়ম মেনে লেবু খান তাহলে আপনার ক্যান্সার থেকে শুরু করে শরীরের যে কোন রোগ বালাই দূরে থাকবে।
অনেকেরি আবার লেবু খাওয়া টা অভ্যাস থাকে প্রতিদিনের। লেবুর পানি সকালে অথবা রাতেই খাওয়া উচিত। তবে নিয়ম ছাড়া যদি আপনি অতিরিক্ত লেবু বা লেবুর শরবত খান তাহলে হতে পারে এর বিপরীত টা।
প্রতিদিন কতটুকু লেবু খাওয়া উচিত
প্রতিদিন কতটুকু লেবু খাওয়া উচিত এটা নিয়ে অনেকেই চিন্তায় পড়ে যায়। অনেকেও আবার মনে করে লেবু খাওয়ার আমাদের জন্য কতটা উপকারী ও কতটা অপকারি। লেবুর সাধারণত আমাদের রান্নাবান্না থেকে শুরু করে অনেক কাজেই ব্যবহৃত হয়।
আর যদি কিছু উদাহরণ স্বরূপ বলি আমি আপনাদের তাহলে বলবো এই গরমে অনেকেই শরবত বানিয়ে খাচ্ছে আবার অনেকেই মাংস রান্নার জন্য লেবুর রস ব্যবহার করে থাকেন অনেকেই খাবারের সাথে লেবু খেয়ে থাকেন। লেবু খাওয়ার ২০ টি উপকারিতা ও তার বিশেষণ সম্পর্কে আপনারা নিশ্চয়ই উপরে পড়ে এসেছেন লেবুর কতটা প্রয়োজনীয় এবং উপকারিতা।
তবে লেবুর গুনাগুন অনেক। লেবুর অনেক জাত রয়েছে যেমন পাতি লেবু, বারোমাসি কাগজি লেবু, এলাচি লেবু ইত্যাদি। প্রতিদিন পাঁচ থেকে ছয় টেবিল চা চামচ লেবুর রস খেতে পারেন। এক কথায় এক থেকে তিনটা লেবু প্রতিদিনই খেতে পারেন। এই গরমে যদি আপনি লেবুর শরবত করে খান তাহলে আপনার শরীরকে স্ট্রং সতেচ রাখবে।
ঠান্ডা পানিতে লেবু খাওয়ার উপকারিতা
লেবু ফুসফুসকে ভালো রাখতে সহায়তা করে। শুধু ফুসফুস না শরীরের বিষাক্ত দব্য সরিয়ে কিডনিকেও ভালো রাখতে সহায়তা করে লেবু। এই গরমে যদি আপনি ঠান্ডা পানিতে লেবু খান তাহলে আপনার শরীরের জন্য অনেকটাই উপকারী হতে পারে। ঠান্ডা পানিতে লেবু খাওয়ার উপকারিতা হচ্ছে আপনার শরীর কে সুস্থ রাখে এই গরমে, ডিহাইডেশন থেকে দূরে রাখে,
হজম শক্তি বাড়াতে সাহায্য করে, ত্বক ভালো রাখে, কিডনিতে পাথর হওয়া থেকে সুরক্ষিত রাখে, ক্যান্সার প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে ইত্যাদি। তবে লেবু শুধু গরমে কার্যকরী উপকারী না। শীতের সময়ও লেবু অনেক টাই উপকারী। শীতের সময় লেবুর চা বানিয়ে খেয়ে থাকেন অনেকেই। লেবু প্রত্যেকটি মানুষের জন্যই উপকারী।
তবে লেবুর বিভিন্ন জাত থাকলেও সেগুলো জাতের মধ্যে দেশি লেবুরি ভিটামিন বেশি এবং দেশি লেবুরী গুনাগুন উপকারও বেশি। তাই আপনারা চেষ্টা করবেন দেশি লেবুই খাওয়ার। আপনাদের যদি লেবু খাওয়া প্রতিদিনেরই অভ্যাস হয়ে থাকে তাহলে বাড়িতেই লেবুর চারা করতে পারেন।
লেখকের শেষ মন্তব্য
প্রিয় বন্ধুরা' আশা করছি এই পোস্টটি মনোযোগ সহকারে শেষ পর্যন্ত পড়েছেন। পড়ে নিশ্চয়ই এটা বুঝতে পেরেছেন লেবু আমাদের জন্য কত উপকারী। লেবু কোন কোন কাজে ব্যবহৃত হয়। লেবু খাওয়ার পুষ্টি ও গুনাগুন। লেবু খেলে আমাদের শরীরের কি কি রোগ প্রতিরোধ করতে সহায়তা করে।
লেবু খাওয়ার ২০ টি উপকারিতা ও তার বিশেষণ সম্পর্কে আমি আপনাদের বলেছি। তবে শেষ মন্তব্যে এটা আবারো আমি আপনাদের বলতেছি যে আপনারা লেবু খেলেও লেবু নিয়ম অনুযায়ী খাবেন বেশি পরিমাণ লেবু কখনই খাবেন না।
স্বাস্থ্য সম্পর্কে নিজে সচেতন হন এবং বন্ধুদেরও সচেতন করুন। লেবু খাওয়ার বিষয়টি চাইলে আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করতে পারেন এবং আপনার কোন মতামত বা প্রশ্ন থাকলে নিচে মন্তব্য করতে পারেন। নিত্যনতুন সঠিক পোস্ট পড়তে আমার ওয়েবসাইটে ভিজিট করুন।
এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url