কিডনির সমস্যা দূর করার ২০ টি কার্যকারি উপায়
কিডনির সমস্যা যেটি আমরা কম বেশি প্রায় মানুষই এ কথাটা শুনলে চিন্তিত হয়ে থাকি। কিডনির সমস্যা বলতে আসলে কি বোঝায়? আমরা কি জানি সেটি। কিডনির সমস্যা কেন এবং কিসের জন্য হয়ে থাকে। কিডনির সমস্যা ভালো করব কিভাবে।
কিডনির সমস্যা হলে কি ভালো হতে পারে এই নিয়ে থাকছে আজকের বিস্তারিত পোস্ট। এছাড়া ও যারা কিডনির সমস্যা নিয়ে চিন্তিত তাদের জন্য নিয়ে এসেছি কিডনির সমস্যা দূর করার ২০ টি কার্যকারী উপায়।
.
কিডনি রোগ হলে কি ভাল হতে পারে
কিডনি শরীরের মধ্যে থাকা একটি অংশ। কিডনি সমস্যা হলে আমরা অনেকেই চিন্তিত হয়ে পরি কারণ আমরা অনেকেই মনে করি যে হয়তো আমরা আর বাঁচবো না। তাদের উদ্দেশ্যে আমি একটি কথা বলতে চাই সেটি হচ্ছে কিডনি সমস্যা অনেক ধরনের হয় থাকে।
আরও পড়ুন : ওজন কমানোর ২০ টি উপায়
একটা কিডনি নষ্ট হয়ে গেলে ও আরেকটি কিডনি নিয়ে ও মানুষ বাঁচতে পারে। এছাড়া ও কিডনির সমস্যা দূর করার ২০ টি কার্যকারী উপায় সম্পর্কে আমাদের জানতে হবে কারণ এতে করে আমাদের কিডনি ভালো রাখতে পারবো।
কিডনি রোগ হলে যে খাবার গুলো থেকে দূরে থাকতে হবে
আমাদের প্রতি দিনের খাদ্য তালিকায় থেকে যে ১২ টি খাবার বাদ দিতে হবে কিডনির সমস্যা হলে। তবে কিডনির সমস্যা থাকলে আমরা সেই খাবার গুলোই খাবো যেগুলো খাবার খাদ্য সহজেই হজম করার শক্তি রাখে। যেই খাবারের মধ্যে নুন, পটাসিয়া, ফসফেট, কম থাকবে এবং প্রোটিন মডারেট থাকবে। কিডনির সমস্যা হলে যে খাবার গুলো থেকে বিরত থাকবেন তবে চলেন জেনে নেওয়া যায়:
- কালো জাতীয় পানি বা কালো রঙ্গের পানি খাওয়া যাবে না কিডনির সমস্যা হলে। যেমন কোক।
- অ্যাভোকাডা খাওয়া যাবে না। অ্যাভোকাডা একটি ফল এবং এটি অনেক দামী ও। এই ফলটির মধ্যে রয়েছে প্রচুর পরিমাণ ফাইবার এবং প্রোটিন। এটিও বাংলাদেশের যে কোন জায়গাতে পাওয়া যেয়ে থাকে এটি খেলেও কিডনি সমস্যা যাদের রয়েছে তাদের আরো বেশি হতে পারে।
- গোটা গমের আটার রুটি খাবেন না। এটি মধ্যে প্রচুর পরিমাণ পটাশিয়াম এবং ফসফরাস রয়েছে। তবে নরমাল সাদা আটা খাওয়া যাবে।
- ব্রাউন রাইস খাবেন না। এর মধ্যে বেশি পরিমাণ ফাইবার, ভিটামিন, মিনারেল রয়েছে। যেটি কিডনির সমস্যার রোগীদের একেবারে খাওয়া উচিত নয়।
- কলা খাবেন না। কলার মধ্যে অনেক ক্যালোরি, ফাইবার, হাই পটাশিয়াম থেকে থাকে। যেটা কিডনির রোগী দের জন্য বিপদ জনক। তবে আনারস খেতে পারেন।
- দুগ্ধজাত খাবার না খাওয়া। এর মধ্যে প্রচুর পরিমাণ ফসফেট থেকে থাকে।
- কমলা বা কমলা লেবুর জুস খাওয়া যাবে না। তবে হঠাৎ খেতে মন চাইলে একটু পরিমাণ খেতে পারেন। তাই বলে প্রতিনিয়ত খাওয়া যাবে না।
- রাঙ্গা আলু খাওয়া যাবে না। রাঙ্গা আলুতে উঁচু পরিমাণ পটাশিয়াম রয়েছে।
- প্রসেস মাংস কখনোই খাবেন না। কারণ এটিতে প্রচুর পরিমাণ নুন দেওয়া থাকে।
- টমেটো খাওয়া যাবেনা। কারণ এটিতে প্রচুর পরিমাণ ফাইবার আছে।
- প্যাকেটজাত খাবার না খাওয়া। যেমন কাপ লুডুস। এটি কিডনির জন্য অনেক খারাপ।
- শাক খাবেন না। খেলেও কম খাওয়ার চেষ্টা করবেন।
কিডনি রোগ কি কারনে হয়ে থাকে
কিডনি রোগ কিছুটা আমাদের ভুলের কারণেও হয়ে থাকে আবার কিছুটা অস্বাস্থ্যকর খাবার এবং অস্বাভাবিক ওষুধের কারণে ও কিডনি জনিত রোগ হয়ে থাকে। আজ থেকে কয়েক বছর আগে কিছু গবেষণায় দেখা গিয়েছে যে ১০ থেকে ২৫ শতাংশ বা এরো বেশি নেফ্রাইটিসের কারণে এবং ৩০ শতাংশ ডায়াবেটিসের কারণে তাছাড়াও
১০ থেকে ১৫ শতাংশ উচ্চ রক্তচাপের কারণে আবার বংশগত বিভিন্ন ব্যাকটেরিয়া সংক্রমনের কারণে ও কিডনির সমস্যা হয়ে থাকে। তাই কিডনির সমস্যা দূর করার ২০ টি কার্যকারি উপায় সম্পর্কে আমাদের জানতে হবে। এতে করে আমাদের কিডনির যেন কোন সমস্যা না হয় আগে থেকেই প্রস্তুতি নিতে পারব।
কিডনির সমস্যায় ব্যথা কোথায় থাকে
কিডনির ব্যথা একটি সাধারন ব্যাথা হলে ও এটি শরীরের পেছনে কোমরে যেই ব্যথাটি হয়ে থাকে এটাকে কিডনির ব্যথা হিসেবে উপস্থাপনা করা হয়ে থাকে। কিডনির মত এই সমস্যাটা আমরা যেভাবে বুঝতে পারি সেটি হল শরীর স্বাস্থ্য দুর্বল লাগা, ক্ষুধা কমে যাওয়া, যেকোনো কাজে মনোযোগ না বসা, বমি বমি ভাব হওয়া এগুলো কিডনির সমস্যার কারণ হতে পারে।
আরও পড়ুন : মাথা ব্যাথা কমানোর ১৫ টি উপায়
তাছাড়া ও হাত পা ফুলে যাওয়া চোখ মুখ ফুলে যাওয়া এগুলো কিডনি সমস্যার কারণ হয়ে থাকে। কিডনির একটু সমস্যা বুঝতে পেলেই সঙ্গে সঙ্গে ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে টেস্ট করতে হবে। অনেক লোকের ক্ষেত্রে দেখা যেয়ে থাকে যে কিনডির সমস্যার ব্যথার কারণে পিঠের ব্যথাও হয়ে থাকে। তাই কিডনি সমস্যা আমাদের চিরতরে দূর করার জন্য
আগে থেকেই আমাদের প্রস্তুতি নিতে হবে এবং কিডনির সমস্যা কেন হয় কি কি খাবারের কারণে হয়ে থাকে এই সমস্যা যেন না হয় এর জন্য আমাদের কি কি খাবার খাওয়া উচিত। এই সবকিছু শেষ পর্যন্ত পড়লে জানতে পারবেন। তাছাড়াও কিডনির সমস্যা দূর করার ২০ টি কার্যকরী উপায় সম্পর্কে আমাদের বিস্তারিত জানতে এবং এই নিয়ম গুলো ফলো করতে হবে।
কিডনি ভালো রাখার উপায়
কিডনি নিয়ে সমস্যা পড়ার আগেই আমরা কিডনি যত্ন নিব। তবে চলন জেনে নেওয়া যায় কিভাবে কিডনির যত্ন নিতে হবে। পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি খেতে হবে। পানি খেলে শরীরের অতিরিক্ত টক্সিন বের করে কিডনি কে ভালো রাখতে সাহায্য করে থাকে। প্রতিদিন নিয়মিত ১৫ থেকে ৩০ মিনিট ব্যায়াম করব। অতিরিক্ত পরিমাণ চর্বি, চিনি এবং লবণাক্ত খাবার এরিয়ে চলবো।
রান্নার খাবারে কম তেল ব্যবহার করব এবং ভাজা পোড়া খাবার থেকে বিরত থাকবো ভাজা খাবারের থেকে সিদ্ধ খাবার বেশি খাব। আইবুপ্রোফেন এবং অ্যাসপিরিনের মতো ব্যথার ঔষধ গুলি একভাবে দীর্ঘদিন ধরে কখনো খাব না। মানসিক টেনশন করবো না।
ধূমপান এবং মদ্যপান থেকে বিরত থাকব। অতি তাড়াতাড়ি খাবার খাওয়ার থেকে ধীরে ধীরে খাবার খাব। প্রতিদিন নিয়মিত পর্যাপ্ত ঘুমাবো। ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া কোন অশোকেরই বা কোন রোগেরই ঔষধ নিজে নিজে খাব না। কোন ওষুধ খেতে হলেও ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে খাব।
কিডনির সমস্যা দূর করার ২০ টি কার্যকরী উপায়
কিডনি সমস্যায় যেন না হয় এর জন্য আমরা যেই নিয়ম গুলো মেনে চলব।
- দারচিনি খাওয়া। দারচিনি কিডনির ফাংশনের উন্নতি ঘটাতে সহেতা করে থাকে। তাই আপনি প্রতি দিন এক টুকরো করে দারচিনি খেতে পারেন।
- প্রতিদিন একটা অথবা দুইটা ডিমের সাদা অংশ খেতে পারলে কিডনিকে ভালো রাখতে খুবই সহায়তা করে থাকে।
- আপেল কিডনি ভালো রাখতে সাহায্য করে থাকে। তাই আপনি প্রতিদিনের খাদ্য ভাসের তালিকায় দুই থেকে তিনটি আপেল খেতে পারেন।
- কাঠবাদাম অথবা কাজুবাদাম অতিরিক্ত পরিমাণে না খাওয়া।
- কিডনিকে সুস্থ রাখতে পাকা কলা বিশেষ ভূমিকা রাখে কারণ পাকা কলাতে রয়েছে পটাশিয়াম তবে কিডনির সমস্যা যদি হয়ে থাকে তাহলে কলা খাওয়া থেকে বিরত থাকবেন।
- কফি খাওয়া এড়িয়ে চলতে হবে।
- গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা হলে ঘন ঘন গ্যাস্টিকের বড়ি না খাওয়া।
- মানসিক চাপ এবং টেনশন দূরে রাখা।
- দ্রব্য পান না করা।
- অতিরিক্ত পরিমাণ না নাপা বড়ি না খাওয়া।
- লাউশাক, ডাটা শাক, লাল শাক বেশি পরিমাণ খেতে হবে।
- দৈনিক দিনে ১ থেকে ২ টা কাচা পেঁয়াজ খেতে পারেন। পেঁয়াজের থাকা ফ্লাইবনয়েজ রক্তের চর্বি দূর করে কিডনিকে সহায়তা করে।
- পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি পান করা। পানি আমাদের কিডনিকে সুস্থ সবল রাখতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে।
- কাঁচা রসুন এক থেকে দুই কোয়া দৈনিক খেতে পারেন। রসুনের থাকা আন্টি ইনফ্লেমেটরি শরীরকে সুস্থ রাখার পাশাপাশি কিডনি কেউ ভালো রাখে।
- সব সময় নরম মাছের থেকে টাটকা মাছ খাওয়ার চেষ্টা করবেন।
- বাঁধাকপিতে থাকা ভিটামিন বি সিক্স, ভিটামিন সি কে, সাইবার এবং ফলিক এসিড আমাদের কিডনিকে ভালো রাখতে সাহায্য করে থাকে। এটি বারো মাস পাওয়া না গেলে ও যে সময়টা পাওয়া যায় চেষ্টা করবেন ওই সময়টিতে এটি বেশি করে খাওয়া।
- রান্নার খাবারে কম লবণ ব্যবহার করা বা পর্যাপ্ত লবণ না খাওয়া।
- প্রতিদিন নিয়মিত ব্যায়াম করা।
- কিডনির যেকোনো কারণ বা লক্ষণ দেখতে পেলেই সঙ্গে সঙ্গে ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া।
- এই 19 টি নিয়ম কারণ ভালো ভাবে জেনে এবং পরে সেগুলো মেনে চলা।
কিডনির সমস্যা হলে যে ১০ টি লক্ষণ দেখে বুঝে নিবেন
কিডনির সমস্যা আমাদের কম বেশি মানুষজনেরি হয়ে থাকে। তবে কিডনির সমস্যা হলে আমরা কি ভাবে বুঝব ঘরোয়া উপায়ে। চলুন জেনে নেওয়া যাক
- প্রসাবের রং যদি হলুদ বা অন্য রকম পরিবর্তন হয়।
- কোন কাজে মনোযোগ না বসা।
- শ্বাস নিতে কষ্ট হওয়া।
- বমি বমি ভাব হওয়া।
- শরীরে ফোলা ভাব
- প্রোসাবের সাথে রক্ত বের হওয়া।
- পেছনে মাজায় ব্যাথা।
- প্রোসাবের সময় ব্যাথা।
- ত্বকের বিভিন্ন সমস্যা দেখা দেওয়া।
- সব সময় ঠান্ডা ঠান্ডা বোধ হওয়া।
লেখক এর শেষ মন্তব্য
কিডনির সমস্যা দূর করার ২০ টি কার্যকরী উপায় সম্পর্কে আপনারা জেনে আশা করছি উপকৃত হবেন। তাছাড়াও কিডনির সমস্যা সহ আরো যদি বিষয়বস্তু সম্পর্কে সঠিক তথ্যটি জানতে চান তাহলে নিয়মিত আমার ওয়েবসাইটে পোস্ট করতে হবে।
এছাড়াও কিডনির সমস্যার দূর করার উপায় গুলো জেনে আপনারা কতটুকু উপকৃত হয়েছেন নিচে মন্তব্য বক্সে অবশ্যই আমাকে জানাতে ভুলবেন না। আপনি চাইলে আপনার পরিচিত বন্ধুদের এবং পরিবারের সাথেও এই কথা গুলো শেয়ার করে তাদের জানাতে পারেন।
তারাও কিনডিনিকে ভালো রাখতে এই নিয়ম গুলো ফলো করবে এবং কিছু খাবার খাওয়া থেকে বিরত থাকবে যেগুলো আমাদের কিনডিকে ভালো রাখতে সহায়তা করবে। ধন্যবাদ এই পোস্টটি মনোযোগ সহকারে শেষ পর্যন্ত পড়ার জন্য এবং আমার সাথে থাকার জন্য।
এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url