বাদাম খাওয়ার উপকারিতা ও গুণাগুন
পুষ্টিগুণে ভরা বাদাম। এটা আমরা হয়তো সবাই জানি। কিন্তু বাদাম খেলে কি কি সমস্যা দূর হয় এবং কি কি শরীর স্বাস্থ্যের জন্য উপকার হয় সেটা কি আমরা জানি? কম বেশি হয়তো সবাই জানি। কিন্তু ভালো ভাবে তেমন কেউ জানি না। তাই যারা বাদাম খেতে পছন্দ করেন বা অনেকে বাদাম খেতে চান না তাদের জন্য আজকের এই আর্টিকেলটির লেখা।
আজকের এই পোস্টটি পড়লে আপনারা বাদাম খাওয়ার উপকারিতা ও গুণাগুণ সম্পর্কে জানতে পারবেন। তাছাড়াও বাদাম খেলে কি কি রোগ থেকে মুক্তি পাওয়া যায় সেই সবকিছু বিস্তারিত থাকছে আজকের পোস্টে। বাদাম সম্পর্কে জানতে শেষ পর্যন্ত এই পোস্টটি পড়তে থাকুন।
.
কাচা বাদাম খাওয়ার উপকারিত
কাঁচা বাদাম অনেকেই খেতে চায় না কিন্তু কাঁচা বাদাম খেলে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসতে পারবেন খুব তাড়াতাড়ি। বাদামে রয়েছে ভিটামিন ই ম্যাগনেসিয়াম এবং ক্যালসিয়াম। বাদাম কিন্তু ওজন কমাতেও বেশ কার্যকরী ভূমিকা রাখে। তবে বাদাম খাওয়ার উপকারিতা ও গুনাগুন সম্পর্কে জানার পরে আপনি নিজে নিজেই সিদ্ধান্ত নিবেন যে আজ থেকে আপনি কাঁচা বাদাম খাবেন কি খাবেন না।
আরও পড়ুন : রাত বেশি জাগলে কি সমস্যা হয়
আবার এই বাদামি যদি আপনি খান এতে করে ওজন কমাতে পারবেন তবে সেই নিয়মাবলী সম্পর্কে জেনে তবে খেতে হবে। তবে বাদাম কিন্তু ওজন কমাতে না বাদাম ওজন বাড়াতেও সাহায্য করে থাকে। শুনে হয়তো আপনারা হতাশ হয়ে পড়ছেন। কিন্তু আপনারা যদি আজকের পোস্টটি শেষ পর্যন্ত পড়তে থাকেন তাহলে বাদাম খাওয়ার উপকারিতা ও গুনাগুন সম্পর্কে জানার পাশাপাশি কিভাবে ওজন বাড়াতে এবং কমাতে পারবেন জানতে পারবেন।
বিশেষজ্ঞদের মতে যারা নিয়মিত চার থেকে পাঁচটা করে বাদাম খেয়ে থাকে তাদের শরীরে অন্যদের শরীরের থেকে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বেশি থাকে। তাছাড়াও পানিতে ভিজিয়ে রেখে যদি প্রতিদিন সকালে নিয়মিত কাঁচা বাদাম খেতে পারেন তাহলে গ্যাস ও এসিডিটি সমস্যা থেকে মুক্তি পাবেন। শীতের সময় যদি সাথে ভেজানো বাদ খেতে পারেন তাহলে শরীরের জয়েন্টে জয়েন্টে ব্যথা এবং কোমরের ব্যথা থেকে মুক্তি পাবেন কারণ বাদামে রয়েছে প্রচুর পরিমাণ ক্যালসিয়াম।
কাচা বাদাম খাওয়ার নিয়মাবলী
বাদামে রয়েছে অনেক পুষ্টিগুণ এবং ভিটামিন সহ ক্যালসিয়াম এবং ম্যাগনেসিয়াম। কিন্তু বাদাম শুধু তো খেলেই হবে না বাদাম খাওয়ার নিয়মাবলী সম্পর্কেও জানতে হবে। তবেই না জানতে পারবেন কিভাবে বাদাম খেলে ওজন বাড়তে পারে কিভাবে বাদাম খেলে ওজন কমতে পারে। তবে এইসব বিষয়ে জানতে হলে বাদাম খাওয়ার উপকারিতা ও গুনাগুন সম্পর্কে আমাদের জানা প্রয়োজনীয়।
এতে করে আমরা বুঝতে পারবো বাদাম আমাদের শরীরের জন্য কতটা ক্যালসিয়াম এবং পুষ্টিগুণ বৃদ্ধি করে থাকে। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে আমরা বাদাম ভেজে খেয়েই থেকে থাকি। কিন্তু ভাজা বাদাম খাওয়ার চেয়ে যদি আপনি কাঁচা বাদাম পানিতে ভিজে প্রতিদিন নিয়ম করে খান তাহলে ডায়াবেটিস সহ বিভিন্ন রোগ প্রতিধের ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করবে।
তবে চলুন জেনে নেওয়া যাক কাঁচা বাদাম খাওয়ার নিয়মাবলী।প্রতিদিন এক মুঠো বাদাম রাতে পানিতে ভিজিয়ে সকালে ওই বাদামটি খালি পেটে খেতে হবে। এতে করে শরীরে বেশি পরিমাণ ক্যালসিয়াম যুগে থাকে। বিশেষ করে মেয়েরা বেশি খাওয়ার চেষ্টা করবেন এটি।
বাদাম খাওয়ার উপকারিতা ও গুনাগুন
বাদাম অনেক রকমের হয়ে থাকে। এক একটি বাদামে এক এক রকম ভাবে গুনাগুন এবং পুষ্টি থেকে থাকে। তাছাড়া বাদাম খেলে শরীরে মিলে বিভিন্ন রকমের উপকারিতা এবং পুষ্টিগুণ। যা আমাদের শরীরকে ভালো রাখতে সহায়তা করে থাকে।
একটি বাদামে কতটা গুনাগুন এবং উপকারিতা রয়েছে সেগুলো আপনারা জানলে চমকে উঠবেন। কারণ বাদামে এত পরিমাণ ক্যালসিয়াম এবং ভিটামিন রয়েছে যেগুলো শরীর স্বাস্থ্যের জন্য বেশ কার্যকরী। এই বাদাম খাওয়া অনেকের একটি পুরনো অভ্যাস ও হয়ে থাকে। চিনা বাদাম খেলে শরিলে মিলবে অনেক রকমের উপকারিতা তবে চলুন জেনে নেয়া যাক বাদাম খাওয়ার উপকারিতা ও গুনাগুন সম্পর্কে।
- চিননা বাদাম খেলে বয়সের দাগ ছাপ দূর করে থাকে।
- ত্বকের উজ্জ্বলতা বজায় রাখতে চিনা বাদাম নিয়মিত খেতে পারেন।
- চিনা বাদামে থাকা ভিটামিন ই ত্বকের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে থাকে।
- চিনাবাদম ভিটামিন ই এর উৎসব যেটি ত্বকের কালো দাগ ছাপ দূর করে ত্বকের উজ্জ্বলতা বজায় রাখে।
- চিনা বাদাম চোখের ড্রাগ স্লাটিক দূর করতে সাহায্য করে।
- চিনা বাদাম থেকে পাওয়ার তেল ত্বকে নরম তুলতুলে রাখতে সহয়তা করে।
- প্রতি দিন বাদাম একমুঠো পানিতে ভিজিয়ে খেলে ডায়াবেটিস নিয়ন্তনে আনা যায় খুব সহজেই।
- হাড়ের ক্ষয় পূরণ করে থাকে বাদাম খেলে।
- বাদাম খেলে মস্তিষ্কের কার্য ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে সহায়তা করে থাকে।
- রক্তে থাকা খারাপ কোলস্টোর কমাতে সাহায্য করে রক্তেকে পরিষ্কার রাখে।
- ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে বেশ কার্যকরী এই চিনাবাদাম।
- প্রতিদিন নিয়মিত বাদাম খেলে রক্তের গ্লোকোজের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখে।
- বাদাম খেলে ব্লাড প্রেসার নিয়ন্ত্রণ রাখতে সাহায্য করে।
- শরীরের পুষ্টির গুনাগুন ভারসাম্য বজায় রাখে।
বাদাম কত প্রকার ও কি কি
বাদাম কিন্তু অনেক প্রকার হয়ে থাকে। কিন্তু আমাদের যদি কেউ বলে যে কয়েকটি বাদামের নাম বলতে আমরা হয়তো দুই তিনটা বলেই পরবর্তীতে বর বলতে পারব না। অনেকেই আছে এমন। তাই তাদের জন্য নিয়ে এসেছি কিছু বাদামের নাম। তবে চলুন জেনে নেওয়া যাক বাদামের কয়েকটি নাম। আখরোট, চিনা বাদম, কাজু বাদাম, কাঠবাদাম, পেস্তা বাদাম, রাজিল নাট, পাইন বাদাম, হ্যাজলনাট, পিকন্যান্স, চেস্ট নাট ইত্যাদি।
আরও পড়ুন : শরীর স্বাস্থ্যের জন্য পানির প্রয়োজনীয়তা
এই বাদাম গুলোর মধ্যে যদি আপনি প্রতিদিন নিয়ম করে চিনা বাদামও খান তাহলে শরীরের মধ্যে পুষ্টিকর উপাদান প্রবেশ করবে। কাচা বাদাম খেলে পুষ্টিগুণ সহ হারে জোর বাড়ার পাশাপাশি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় এবং ক্যান্সার প্রতিরোধ করতে সক্ষম হয়ে থাকে।
ওজন বাড়াতে বাদাম খাবেন যেভাবে
ওজন বাড়াতে হলে আমাদের বাদাম খেতে হবে যেভাবে।অনেকেই আছে যারা ওজন বাড়াতে চায় কিন্তু কিভাবে ওজন বাড়াবে কি খেলে ওজন বাড়বে এই নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়ে যায়। কিন্তু বাদাম খেয়ে আপনি ওজন বাড়াতে পারেন অতি তাড়াতাড়ি। আবার আমরা এটিও জেনেছি বাদাম ওজন বারাতেও পারে এবং কমাতেও পারে। এখন আমরা জানবো কিভাবে বাদাম খেলে ওজন দ্রুত।
আপনি যদি প্রতিদিন নিয়ম করে ১০ থেকে ২০ গ্রাম বাদাম খান তাহলে ওজন বাড়াতে সক্ষম হবেন। তাছাড়াও ওজন বাড়াতে বাদাম শেখ এবং মিল্ক শেক খেতে পারেন। তবে চেষ্টা করবেন এটা অবশ্যই বাড়িতে বানিয়ে খাওয়ার। বাদাম শেক এবং মিল্ক শেক কিভাবে বানাবেন এই নিয়ে চিন্তিত হয়ে পড়লেন। চিন্তার কারন নেই আমি আপনাকে বাদাম শেখ এবং মিল্ক শেক কিভাবে বানাবেন সেটি বলে দিব। বাদাম শেখ ১০ থেকে ১৫ গ্রাম কাচা বাদাম অথবা ভাজা বাদাম ব্লেন্ড করে নিতে হবে।
এরপর একটা পাত্রে অশু পানি গরম করে নিতে হবে। এরপর সেই প্রানি টি একটি গ্লাসে ঢেলে নিতে হবে। তারপর আগে থেকে ব্লেন্ড করা বাদামের ওই গুড়োটা পানিতে দিয়ে দিতে হবে। তারপর এক চা চামচ চিনি মিক্সড করে খেতে পারেন। তবে চিনি অপশনাল আপনারা চাইলে দিতে পারেন আবার নাও পারেন। মিক্ল শেক বানানোর জন্য একটা পাত্রে কিছুটা পরিমাণ দুধ জাল দিয়ে নিতে হবে।
এরপর সেই জাল দেওয়ার দুধ টি একটি গ্লাসে ঢেলে নিয়ে সেখানে কিছুটা পরিমাণ বাদামের গুঁড়ো আর সাথে মধু অথবা চিনি এড করে খেতে পারেন। তবে এটি আপনারা সকালে এবং রাতে খাওয়ার চেষ্টা করবেন। যারা দ্রুত ওজন বাড়াতে চান তারা দিনের মধ্যে এটি ২ বার বানিয়ে খাবেন।
আর যারা ধীরে ধীরে বাড়াতে চান তারা শুধুমাত্র রাতে ঘুমানোর আগেই খাবেন। তবে আমার মতে ধীরে ধীরে ওজন বাড়ানোটাই বেশি ভালো হয়। এছাড়াও আমরা উপরে আরো জেনে এসেছি বাদাম খাওয়ার উপকারিতা ও গুনাগুন সম্পর্কে যেগুলো আমরা মেনে চললে শরীর স্বাস্থ্য সম্পূর্ণ ভাবে ভালো রাখতে পারব।
ওজন কমান বাদাম খেয়ে
প্রতি দিন নিয়ম করে যদি ১০০ গ্রাম বাদাম খান তাহলে আপনার শরীরে প্রতি দিন ৫৫০ করে ক্যালোরি পাবে। ৫০ গ্রাম বাদামে রয়েছে ১০ গ্রাম ক্যালরি। প্রতিদিন যদি নিয়ম করে ৩০ থেকে ৫০ গ্রাম বাদাম খান তাহলে ওজন কুমতে পারে। গবেষণায় দেখে গিয়েছে যে যারা ওজন কমাতে চায় তারা যদি নিয়মিত ৩০ থেকে ৫০ গ্রাম বাদাম প্রতিদিন খায় তাহলে দ্রুত ওজন কমাতে সক্ষম হবে। এই বাদাম কি আপনারা চাইলে ভাজিয়ে অথবা পানিতে ভিজিয়ে রেখেও খেতে পারেন।
বেশি দামি বাদাম গুলো কিনতে না পারলে ও কম দামি বাদাম গুলো খেতে পারেন। তাছাড়া ও বাদাম খাওয়ার উপকারিতা ও গুনাগুন সম্পর্কে আপনারা তো জেনেই এসেছেন যে বাদাম আমাদের শরীর স্বাস্থ্যে কতটা উপকার করে থাকে। তাই যারা বাদাম খেতে চান না আজকে থেকেই বাদাম খাওয়া শুরু করুন শরীর স্বাস্থ্য ভালো রাখার জন্য।
লেখকের শেষ মন্তব্য
প্রিয় বন্ধুরা' বাদাম খাওয়ার উপকারিতা ও গুনাগুন সম্পর্কে পড়ে আপনার কেমন লেহেছে সেটি মন্তব্য বক্সে জানাতে ভুলবেন না। আশা করছি আপনাদের ভালই লাগবে কারণ বাদাম খাওয়ার যে আমাদের শরীরের জন্য কতটা প্রয়োজন এবং বাদামের যে কতটা পুষ্টিগুণ রয়েছে সেইসব সম্পর্কে হয়তো আমরা অনেকেই জানি আবার অনেকেই জানিনা। যারা নতুন জেনেছেন তারা পরিচিত বন্ধু এবং পরিবারদের মাঝেও শেয়ার করুন।
এতে করে তারাও বাদাম খাওয়ার প্রতি উৎসাহ আরোও বেড়ে দিবে। এছাড়াও যদি আপনার কোন মন্তব্য বা প্রশ্ন থেকে থাকলে নিচে কমেন্ট বক্সে জানান। আমি যথার্থ সময় আপনার প্রশ্নের উত্তরটি সঠিক ভাবে দিয়ে দিব। এ পোস্টটি পড়ে আশা করছি ভালোই লেগেছে। ধন্যবাদ এই পোস্টটি শেষ পর্যন্ত মনোযোগ দিয়ে শেষ পর্যন্ত পড়ার জন্য এবং আমার পাশে থাকার জন্য।
এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url