ভ্রমণে যাওয়ার জন্য ব্যাগ গোছাবেন যেভাবে
ভ্রমরে যাওয়ার কথা ভাবতেছেন? যাওয়ার আগেই কিভাবে প্রস্তুত হবেন ব্যাগে কিভাবে জামা কাপড় গোছাবেন এই নিয়ে চিন্তিত?
ভ্রমণে যাওয়ার সময় কি পরিমান জিনিসপত্র নেওয়া উচিত বা শিশুদের কিভাবে যত্ন নেওয়া উচিত এছাড়াও ভ্রমণের যাওয়ার জন্য ব্যাগ গুছাবেন যেভাবে তাই নিয়ে থাকছে আজকের বিস্তারিত পোস্টে আশা করছি এই পোস্টটি পড়লে ভ্রমণ সম্পর্কে আপনার অনেক আইডিয়া এসে যাবে। এছাড়াও ভ্রমনে যাওয়ার সময় একটা ব্যাগে অনেক কিছু আটাতে পারবেন।
.
ভ্রমণে যাওয়ার জন্য কোন পোশাক নিলে ভালো হবে
ভ্রমণে যেতে ভালোবাসে না এমন হয়তো কেউ নেই। কমবেশি সবাই ভালবাসে। ভ্রমণে যাওয়ার সময় কি পোশাক নিতে হবে আমাদের এই নিয়ে অনেকেই চিন্তিত হয়ে থাকে কারণ ভ্রমনে গেলে আরাম দায়ক এবং রিলাক্সে ঘুরতে ফিরতে সবাই চায়। এমন কোন পোশাক নেওয়া উচিত নয় যেটি পড়লে আমাদের অস্থির লাগবে এবং ভ্রমণের যাওয়ার শান্তি টাই নষ্ট হয়ে যাবে।
আরও পড়ুন : নিজেকে সুস্থ রাখার ২০ টি উপায়
তাই যদি গরমের সময় ভ্রমণে যেতে চান তাহলে অবশ্যই আপনাকে সুতি জামা কাপড় নিতে হবে এবং সেই কাপড়টি যেন অবশ্যই ঢিলা ঢালা হয়ে থাকে। কারণ ভ্রমনে গেলে অবশ্যই আপনি দূরের রাস্তায় জার্ননি করতে যাবেন আর দূরের রাস্তা জার্নিং করতে গেলে যদি আপনি ঢিলেঢালা পোশাক না পড়েন তাহলে অস্থির এবং প্রচুর ক্লান্তি বোধ লাগবে যেটি শরীর স্বাস্থ্যের জন্য আপনার ক্ষতি হতে পারে।
গরমের কারণে আমাদের শরীর থেকে যে ঘাম করে থাকে সেটি আমাদের শরীরের বিভিন্ন ব্যাকটেরিয়া সৃষ্টি করতে পারে। মেয়েদের ক্ষেত্রে সালোয়ার এবং ছেলেদের ক্ষেত্রে গেঞ্জি এবং প্যান্ট পরায় বেশি ভালো। যদি শীতের সময় হয়ে থাকে তাহলে পলেস্টার এবং সিল্কি জামা কাপড়ও পড়তে পারেন কারণ সিল্কি এবং পলেস্টার কাপড় পরলে শীত কুম লাগে।
এছাড়াও সাথে অবশ্যই চাদর এবং শীতের দুই একটা সোয়েটার মোটা দেখে নিতে হবে কারণ দূরের রাস্তা শীতের সময় জার্নি করতে গেলে শীত একটু বেশি লেগে থাকে এর জন্য চাদর অথবা সোয়েটার নিতে পারেন সঙ্গে করে।
ভ্রমণে যাওয়ার পর ক্লান্ত হলে কিভাবে ক্লান্তি দূর করবেন
ভ্রমণে যাওয়ার পর শরীরটা ক্লান্ত হবে হয়তো এটাই স্বাভাবিক। কারণ ভ্রমনে যেতে হলে অনেক দূরের রাস্তায় জার্নি করে যেতে হয়। কিন্তু ভ্রমণে যাওয়ার পর যে ক্লান্তি টা হয়ে থাকে সেটি দূর করবেন কিভাবে।
ভ্রমণে যাওয়ার পর অবশ্যই সর্ব প্রথম আপনি গোসল করবেন। কারণ গোসল করলে শরীরটা আপনার ফ্রেশ এবং ঠান্ডা লাগবে। তারপর আজে বাজে খাবার খাওয়ার চেয়ে ফুড জাতীয় খাবার অথবা ভাত খাবেন এতে করে শরীরের যেই ক্লান্তি ভাবটা রয়েছে সেটি দূর হবে। খাওয়া হয়ে গেলে এক থেকে দেড় ঘন্টা ঘুমিয়ে নিবেন।
কারণ দূরের রাস্তা জার্নি করে আসার কারণেই শরীরের যে দুর্বলতা সৃষ্টি হয় সেটি ঘুমের কারণে ঘারতি টুকু পূরণ হয়। তাছাড়াও ভ্রমণে যাওয়ার সময় অবশ্যই বাড়ি থেকে রান্না করা কিছু খাবার সঙ্গে করে নিবেন এতে করে বাহিরের খাবার খাওয়ার কারণে আপনারা গ্যাস্ট্রিকের সমস্যায় পড়তে হবে না। ভ্রমণে যাওয়ার সময় কিছুটা পরিমাণ বোতলে পানি নিয়ে নিবেন এবং ঘনঘন পানি খাওয়ার চেষ্টা করবেন। এতে করে আপনার শরীরটা ক্লান্ত কম হবে।
ভ্রমণে যাওয়ার জন্য ব্যাগ গোছাবেন যেভাবে
ভ্রমণে যাওয়ার সময় ব্যাগ কিভাবে গোছাতে হবে এই নিয়ে অনেকেই চিন্তিত হয়ে পড়ে। কারণ ভ্রমণে যাওয়ার সময় এত গুলো জিনিস নেওয়া লাগে যে ব্যাগের মধ্যে আটানই কঠিন হয়ে পড়ে। এর জন্য কিভাবে সহজেই ব্যাগ গোছাবেন এবং অনেক জিনিস ব্যাগের মধ্যে আঠাবেন সেই নিয়েই এখন বিস্তারিত বলতে যাচ্ছি। তবে চলুন জেনে নেওয়া যাক।
ভ্রমনে যার জন্য আমরা প্রথমেই দুইটি টলি ব্যাগ নিব অর্থাৎ একটিতে শিশুদের কাপড় এবং আরেক টিতে বড়দের কাপড়। এরপর আমরা কাপড় গুলো সুন্দর করে ভাঁজ করে নিয়ে ব্যাগে এক সাইডের দিকে রাখবো।
কাপড়গুলো এক সাইডে রাখবো এবং অন্য জিনিসপত্র গুলো আরেক সাইডে রাখবো। কাপড় গুলো এক সাইডে রাখার পর যদি আরো অন্য কারো পোশাক নিতে চান সেক্ষেত্রে আর এক সাইডে রাখুন। একটা জিনিস মাথায় রাখবেন যে কারো জিনিসের সাথেই কারো জিনিস একসাথে এড করে নিবেন না। যদিও নেন তাহলে আলাদা ভাবে নিবেন এতে করে আপনার পরবর্তীতে বের করতে আর অসুবিধা হবে না।
পরবর্তীতে যে সাইডটি ফাঁকা রয়েছে সেখানে আমাদের ব্রাশ, পেস্ট, মেয়েদের সাজগোজের প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র, ফোনের চার্জার, প্রয়োজনীয় কিছু ঔষধ যেমন গ্যাসের বরি, মাথা ব্যাথার এবং জ্বরের বড়ি ইত্যাদি সহ আরো প্রয়োজনীয় যেই টুকিটাকি জিনিসগুলো রয়েছে সেগুলো নিয়ে নিব। আর শিশুদের টলিবাগে শিশুদের প্রয়োজনীয় কাপড়-চোপড় ঔষধ এবং খাবার খাদ্য নিয়ে নিব।
ভ্রমণের যাওয়ার আগে হিসাব নিকাশ কিভাবে করতে হবে
আমরা উপরের কিওয়ার্ডে জেনে এসেছি ভ্রমণে যাওয়ার জন্য ব্যাগ গোছাবেন যেভাবে সম্পর্কে বিস্তারিত এখন আমরা জানব ভ্রমণে যাওয়ার আগেই হিসাব নিকাশ কিভাবে করতে হবে। ভ্রমণে যাওয়ার আগে থেকে পরিকল্পনা যদি থেকে থাকে তাহলে একটু একটু করে প্রতিদিন টাকা সঞ্চয় করে রাখার চেষ্টা করুন।
এছাড়াও ভ্রমণে যাওয়ার আগে বাড়ি থেকে ফোন দিয়ে জানিয়ে নিন আবাসিক হোটেলে ভাড়া কত। আবার যেই স্থানে যেতে চাচ্ছেন ভ্রমণ করতে সেখানকার গাড়ি ভাড়া কত। ভ্রমণের যাওয়ার আগে হিসাব নিকাশ করার ক্ষেত্রে মূলত যেই দুইটি বিষয় নিয়েই আপনি সঠিক হিসাব করতে পারবেন।
তা হচ্ছে হোটেলের ভাড়া সম্পর্কে জানা এবং যে স্থানে যেতে যাচ্ছেন সেই স্থানের গাড়ি ভাড়া কত সেই সম্পর্কে জানা। উদাহরণস্বরূপ ধরে নেওয়া হল বগুড়া থেকে ঢাকার বাস ভাড়া ৫০০ টাকা ১ জনের এবং ঢাকাতে যেই হোটেলে উঠে চাচ্ছেন সেই হোটেলের ভাড়া ১ দিন থাকার জন্য ১০০০ টাকা তাহলে ১ জন করে হিসাব করতে গেলে কত হলো এখন নিচে দেখে নেয়া যাক
১ জনের বাস ভাড়া ৫০০ টাকা
২ বার যাওয়া আসা ৫০০ × ২ = ১০০০
এখন হোটেলের ভাড়া যদি ১০০০ টাকা এক রাতের জন্য হয় ৩ রাতের জন্য কত হবে?
১ জনের এক রাত হোটেলে থাকার ভাড়া ১০০০ টাকা
৩ রাত হোটেলে থাকলে ১০০০× ৩ = ৩০০০
পরবর্তী ধাপে,
১জনের যাওয়া আসা বাস ভাড়া ১০০০ টাকা
১ জনের ৩ রাত হোটেলে থাকার ভাড়া ৩০০০ টাকা
তাহলে (১০০০+৩০০০) =৪০০০ টাকাা।
এভাবে আমরা প্রতি জনের ভাড়া এবং হোটেলে থাকার ভাড়ায় হিসাব করে নিব। এছাড়াও এখানে সেখানে ঘোরাফেরা বা খাওয়া-দাওয়ার জন্য এক্সট্রা কিছু টাকা নিয়ে নিব নিজের আইডিয়া অনুযায়ী।
ভ্রমণে যাওয়ার সময় যে বিষয় গুলোর প্রতি সচেতন হতে হবে
ভ্রমণের যাওয়ার সময় যে বিষয়গুলোর প্রতি আমাদের সচেতন এবং সচেতন হওয়া বেশি জরুরি। কারণ ভ্রমনে যাওয়ার পর হয়তো অনেকে সমস্যায় পড়ে। যেই ভুল গুলোর কারণে বা যেই জিনিস গুলোর প্রতি সচেতন না হওয়ার কারণে অনেক কিছুই হারিয়ে ফেলে থাকেন অনেকেই। ভ্রমণে যাওয়ার সময় প্রথম যে বিষয়টি আমাদের জানা জরুরী। সেটি হচ্ছে :
- যেই জায়গাতে ভ্রমণে যেতে চান আগে থেকেই সেই জায়গার কিছু তথ্য জেনে রাখতে হবে।
- বিশেষ করে যেই জায়গায় যাবেন ওই জায়গায় যদি পারেন থানার নাম্বার এবং পুলিশের নিকট নাম্বার ঐখান কার।
- কিছু আবাসিক হোটেলের নাম সহ হাসপাতালের নাম জানতে হবে।
- তাছাড়াও মূল যে বিষয়টি সেটি হচ্ছে যে আবাসিক হোটেলে উঠতে চান যে সে আবাসিক হোটেলে শুরুতেই জেনে নিবেন ভাড়া কত।
সচেতন হবেন যে বিষয় গুলোর প্রতি ভ্রমণে যাওয়ার সময়
- ভ্রমণে যাওয়ার সময় অবশ্যই নিজের টাকা পয়সা হেফাজতে রাখুন।
- ভ্রমণে যাওয়ার সময় যদি আপনি লোকাল বাস অথবা নোকাল ট্রেনে জান তাহলে অবশ্যই নিজের ফোনটিকে হেফাজতে রাখতে হবে।
- ভ্রমণে যাওয়ার সময় কিছু বাড়ি থেকেই রান্না করা খাবার সঙ্গে নেওয়ার চেষ্টা করবেন।
- ভ্রমণে যাওয়ার সময় জ্বরের বরি এবং গ্যাসটিক সহ বুক জ্বালাপোড়া ওষুধ টি সঙ্গে নিবেন।
- ভ্রমণে যাওয়ার সময় যদি আপনার কোলে শিশু থাকে তাহলে অবশ্যই সেই শিশুটির প্রতি যত্ন এবং খেয়াল রাখবেন।
ভ্রমণে যাওয়ার সময় শিশুদের কিভাবে যত্ন নিবেন
ভ্রমণে যাওয়ার সময় যদি আপনার সাথে কোন ছোট বাচ্চা অথবা নবজাতক শিশু থেকে থাকে তাহলে নিজের চাইতে অবশ্যই তার যত্ন আগে বেশি নিতে হবে। কারণ জার্নিং করার সময় আমাদের শরীর যতটা পরিমাণ ক্লান্ত হয় তার থেকে তিনগুণ পরিমাণ শিশুর শরীর ক্লান্ত হয়ে থাকে। এছাড়াও ব্যাগ গোছানোর সময় অবশ্যই শিশুর জিনিস পাতির উপর নজর রাখতে হবে যে শিশুদের প্রয়োজনীয় জিনিস গুলো নিয়েছেন কি নেননি।
আরও পড়ুন : পাসপোর্ট করার জন্য কত বছর বয়স লাগে
ভ্রমণে যাওয়ার সময় অবশ্যই শিশু যে খাবার গুলো খেয়ে থাকে সে খাবার গুলো নিতে হবে। এছাড়াও শিশুর জামা কাপড় থেকে শুরু করে প্রয়োজনীয় যত জিনিসপত্র রয়েছে সে সব গুলো দেখে শুনে আগে থেকেই ব্যাগে গুছিয়ে রাখতে হবে। বিশেষ করে শিশুটির যদি কোন ঔষধ থেকে থাকে সেটির প্রতি আরো বেশি নজর দিতে হবে। ভ্রমণে যখন যাবেন তখন অবশ্যই শিশুকে হাত পা সহ মাথা মুড়িয়ে নিতে হবে ভালো ভাবে। শিশুটিকে কিছুক্ষণ পরপর খাওয়াতে হবে।
ভ্রমণে যাওয়ার সময় বড়দের লাগেজ এবং শিশুদের লাগেজ অবশ্যই আলাদা করবেন। শিশুর জন্য যে কাপড়-চোপড় সহ জিনিসপত্র নিবেন সেটি শুধু শিশুর ব্যাগেই রাখবেন। তাছাড়াও শিশুর প্রয়োজনীয় সব সময় যে জিনিসটা লাগবে সেটিও নিজের হাতেই নিয়ে নিবেন আলাদা একটি শপিং ব্যাগের। শিশুরা যেই জামাটা পড়ে বাহিরে ঘুরতে পারবে সেই জামাটা চার থেকে পাঁচটা নেওয়ার চেষ্টা করবেন। এইভাবে আপনি শিশুদের প্রতি যত্ন এবং খেয়াল রাখবেন।
লেখকের শেষ মন্তব্য
ভ্রমণে যাওয়ার জন্যে ব্যাগ গোছাবেন যেভাবে বিস্তারিত পরে আপনাদের আশা করছি ভালো লেগেছে। ভ্রমণে যাওয়ার সময় হিসাব নিকাশ কিভাবে করে নিয়ে যাবেন সেই সম্পর্কেও বিস্তারিত পরে বুঝতে পেরেছেন আশা করছি কারণ আমি পোষ্টের মধ্যে হিসাব নিকাশসহ বিভিন্ন তথ্য বলে এসেছি। আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ এই পোস্টটি শেষ পর্যন্ত মনোযোগ সহকারে পড়ার জন্য।
এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url